বিশেষ প্রতিনিধি : যশোর মণিরামপুরে সরকারি ৫৫৫ বস্তা চাল পাচারের ঘটনায় সিন্ডিকেটের প্রধান আদায়কারী জগদিশ দাসকে শনিবার দুপুরে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। যশোর ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মেদ আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আটক জগদিশ দাস পৌরসভার জুড়ানপুর এলাকার রবীন্দ্র নাথ দাসের ছেলে। এ ছাড়াও জগদিশ পাতন-জুড়ানপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নাইটগার্ডের চাকরি করেন।
জানা যায়, মণিরামপুর থানা পুলিশের একটি টিম ৪ এপ্রিল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পৌরশহরের বিজয়রামপুরে ভাইভাই রাইস মিল এন্ড চাতালে অভিযান চালায়। এসময় উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফীর উপস্থিতিতে সরকারি কাবিখার ৫৫৫ বস্তা চাল জব্দ করা হয়। আটক করা হয় চাতাল মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ট্রাক চালক ফরিদ হাওলাদারকে। অবশ্য সেখানে চাতাল মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ, সাংবাদিকসহ উপস্থিতিদের সামনে চাল পাচারের ঘটনায় খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও), চাল বেচাকেনার সিন্ডিকেটের সদস্য শহিদুল ইসলাম, অষ্টম দাস, জগদিশ দাস, দেবাশীষ দাসসহ জড়িত অনেক কুশিলবদের নাম প্রকাশ করে।
এছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে ভাগ্নে ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তি বাচ্চু চাল পাচারের ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন। পুলিশ শুধুমাত্র চাতাল মালিক মামুন এবং ট্রাকচালক ফরিদের নামে মামলা করেন।
পুলিশ ৫ এপ্রিল মামুন এবং ফরিদকে আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে। রিমান্ড শেষে ৭ এপ্রিল তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সম্পা বসুর আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক মামুন এবং ফরিদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন চাল পাচারের সাথে আরো জড়িত ছিলেন সিন্ডিকেট নেতা শহিদুল ইসলাম, জগদিশ দাসসহ আরো দুজন সরকারি কর্মকর্তা। মণিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ২১ এপ্রিল যশোর ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অপরদিকে সরকারি চাল আটক হবার পর পরই সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা মনিরুজ্জামান মুন্নাকে খুলনায় বদলি করা হয়।
মামুনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক চাল পাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ মে রাতে ডিবি পুলিশের একটি টিম পৌরশহর থেকে সিন্ডিকেট নেতা শহিদুল ইসলামকে আটক করে। পরে শহিদুল ইসলাম আদালতে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, সরকারি চাল পাচারের ঘটনায় তার সাথে জড়িত ছিলেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তি বাচ্চু এবং পাতন-জুড়ানপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যুবলীগ নেতা রুহুল কুদ্দুস।
প্রথম আটক চাতাল মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্বীকারোক্তি মোতবেক জড়িত সিন্ডিকেটের প্রধান আদায়কারী জুড়ানপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী জগদিশ দাসকে পুলিশ শনিবার বেলা ১২টার দিকে মণিরামপুর থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ। সরকারি ৫৫৫ চাল পাচারকা- মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যশোর ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মেদ সিন্ডিকেটের আদায়কারী জগদিশ দাসকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, চাল পাচার ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
Leave a Reply