মণিরামপুর প্রতিনিধি: যেদিন কাকী (হুজুরের বউ) বাড়ি থাকতো না, সেদিন মাহমুদুল হুজুর গা-হাত পা টিপে দেয়ার কথা বলে বাড়িতে নিয়ে যেতেন। রাতে হুজুর মোাবইল দেখার এক পর্যায় খারাপ কাজ করতেন। পরে আরো একদিন করতে গেছেন কিন্তু করতে দেয়নি। কারো সাথে বললে খারাপ হবে বলে ভয় দিতেন হুজুর। কথাগুলো বলছিলো যশোরের মণিরামপুর উপজেলার হাঁসাডাঙ্গা গ্রামের এক হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র নাঈম হোসেন। শুধু নাঈম না। মাদ্রাসার আরো অনেক ছাত্রের সাথে ওই শিক্ষক কর্তৃক যৌন (বলাৎকার) নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাঈম হোসেন ওই গ্রামের এছেন সরদারের ছেলে। সে ৩ বছর ধরে ওই হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন গেলে মাদ্রাসা শিক্ষক মাহমুদুল হাসানের যৌন নির্যাতনের শিকার আরো কয়েকজনের সাথে কথা হয়। এসময় একই গ্রামের মশিয়ার রহমানের ছেলে মেহেদি হাসান জানায়, একদিন মাদ্রাসায় কেউ না থাকার সুযোগে হুজুর তাকে দিয়ে গা টেপায়। এক পর্যায় হুজুর তার গোপনাঙ্গে হাত দিয়ে মালিশ করতে বাধ্য করেন। পরে আরো একদিন করাতে গেলে হুজুরের উপর রাগ করে চলে আসি। এসময় যৌন নির্যাতনের শিকার আহসাফুজ্জামান খালিদ প্রথমে ভয়ে কিছু বলতে চাচ্ছিলো না। পরে সে মুখ খোলে। সে জানায়, কয়েক মাস আগে হুজুরের বোনের বিয়েতে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। কাকী আলাদা ঘরে ঘুমান। আর তাকে নিয়ে হুজুর আরেক ঘরে ঘুমায়। রাতে মোবাইল দেখতে দেখতে হুজুর তার সাথেও খারাপ কাজ করে। (ছাত্রদের দেয়া বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ডিং এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত)। মাছুম বিল্লাহ নামের আরো এক ছাত্র একই অভিযোগ করে। সম্প্রতি মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্র মুখ খুললে এলাকায় তোড়পাড়ের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা কমিটি শালিসি সভা করে পুরো ঘটনাটিকে মিথ্যা বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যৌন নির্যাতনের শিকার কোন ছাত্রের অভিভাবককে সেখানে ডাকা হয়নি। অবশ্য ঘটনাটি নিয়ে গ্রামবাসী বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক পক্ষ হুজুরের পক্ষাবলম্বন করে পুরো ঘটনা মিথ্যা বলে দাবি করছেন। এছাড়া কমিটির লোকজনসহ ওই পক্ষটি যৌন নির্যাতনের শিকার ছাত্র ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ঘটনা না বলতে চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নাঈম হোসেনের পিতা এছেন সরদার ক্ষুব্ধ কন্ঠে জানান, তাদের কাউকে না জানিয়ে শালিসি সভার নামে আয়েশি সভা করা হয়েছে।
মাদ্রাসা কমিটির সেক্রেটারী আশরাফ হোসেন বলেন, তারা শালিস করে কোন সত্যতা পাননি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে সকল অভিভাবকদের নিয়ে সভা করা হয়েছিলো বলে তিনি দাবি করেন। মাদ্রাসা শিক্ষক মাহমুদুল হাসান নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, নো নো তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। তাছাড়া মাদ্রাসা কমিটি বৃহস্পতিবার এ নিয়ে বসেছিলো, সেখানে মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়েছে।
Leave a Reply