নূরুল হক, মণিরামপুর : ‘এসো,এসো, এসো হে বৈশাখ। তাপস নিঃশ্বাস বায়ে মুমূর্ষূরে দাও উড়ায়ে, বৎসর আবর্জনা দূর হয়ে যাক। যাক পুরাতন স্মৃতি-যাক ভূলে যাওয়া গীতি। অশ্রু বাষ্প সূদুরে মিলাক-মুছে যাক সব গ্লানি। মুছে যাক জরা অগ্নিবাণে-দেহে-প্রাণে শুচি হোক ধরা।’ বিশ্ব কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের এই ভাবে তার কবিতায় বৈশাখের ধবংশরূপের পাশাপাশি নতুন বছরের আগমন সৃষ্টিকে নতুন রূপে উৎসাহিত করে।
পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ। মণিরামপুরেও জাক-জমকের সাথে পালিত হচ্ছে এ দিনটিকে ঘিরে। দেশের ও দেশের মানুষের মঙ্গল কামনা করে-মঙ্গল শোভা যাত্রার পাশাপাশি পান্তা ভাতের সাথে ইলিশ ভাজি বা কাঁচা লংকার সাথে পান্তা ভাতের আয়োজনসহ নানা রকমের সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিন্তু দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখতে রবীন্দ্র নাথের এই কবিতার মর্মকথা অনুধাবন করে মণিরামপুরের নব-নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারমান নাজমা খানম পহেলা বৈশাখে নিলেন একটি অভিনব উদ্যোগ। মেহনতি মানুষের সাথে এই নির্মল আনন্দের উৎস্য ধারায় নিজেকে উজাড় করে তাদেরকে একটু সম্মান, একটু ভালবাসা, একটু সহনুভূতি জানাতে ব্যস্ত জীবনের কিছুটা সময় ব্যয় করে একটু আবেগমাখা মুখের মিষ্টি হাসি দিয়ে নববর্ষের ভালবাসার পরশে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন রাস্তায়। নতুন বছরে সবার মুখে হাসি ছড়িয়ে পড়–ক আর আগামী দিনগুলো ভরে উঠুক আরও সুন্দর-আরও আনন্দের। এই প্রত্যয় নিয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে হাসি মুখে মেহনতি মানুষকে নিজ হাতে মিষ্টি খাওয়ালেন তিনি। মিষ্টি মুখে দিয়ে গরীব-দূঃখী ভ্যান চালক থেকে শুরু করে আলমসাধু, ইজিবাইক, ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালকসহ খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর চোখে-মুখে আনন্দের হাসি। একটি মিষ্টির মধ্য দিয়ে-যে সারা বছর সুখে-শান্তিতে কাটাতে, যদিও এমনটি নয়-তবুও স্থানীয় পরিষদের একজন শীর্ষ জনপ্রতিনিধি তাদের যে সম্মান দেখিয়েছেন তাতেই তারা খুশি। দেখেছি তাদের মলিন মাখা মুখ খানিতে একটু খানি হাসির ঝিলিক। সেই হাসির ঝিলিকটা কিন্তু মেকি-বা নকল ছিলনা। এক্কেবারে হৃদয় থেকে উঠে আসা।
Leave a Reply