নূরুল হক,মণিরামপুর: মণিরামপুর পৌর শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দখলবাজদের হটাতে পারছে না কর্তৃপ। উচ্ছেদ অভিযান চালালেও কর্তৃপক্ষ ত্যাগের মাত্র ২ থেকে ৩ ঘন্টা স্থায়ী থাকে। তারপর আবারও সেখানে গড়ে উঠে সারি-সারি স্থায়ী এবং অস্থায়ী অবৈধ ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের দোকানপাট। ফলে জনসাধারণের চলাচলে ঘটছে বিঘ্ন, সৃষ্টি হচ্ছে যানজট, ফলে এলাকাটি দূর্ঘটনা কবলিত এলাকা হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। সাথে-সাথে সরকারী রাস্তা চলে যাচ্ছে দখলবাজদের নিয়ন্ত্রনে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মণিরামপুর পৌরশহরের যে কয়টি ব্যস্ততম সড়ক রয়েছে তার মধ্যে পৌর বাজারের ঠিক মাঝখানে ভাজাহাটের মোড় (পুরাতন কলা হাটের মোড়) থেকে পুরাতন মাছ বাজারের পাশ দিয়ে খুচরা কাঁচা বাজারের উত্তর-পূর্ব পাশ ঘেসে-থানার দক্ষিন পাশ দিয়ে মুরগী হাটের কাছে মণিরামপুর-কুলটিয়া সড়কের সাথে মিলিত হয়েছে। এ সড়কটি উপজেলার পূর্ব ও পশ্চিম এলাকার জনসাধারণের চলাচলের একটি গুরুত্বপূর্ন সড়ক হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ন এ সড়কটি এখন সম্পূর্ণ বে-দখল হতে চলেছে। এ রাস্তা দিয়ে আগে প্রাইভেটকার, পিকআপ, মোটর সাইকেল, ভ্যান গাড়ী, নসিমন, করিমন, আলমসাধুসহ ছোট ও মাঝারী যান-বাহন গুলো খুব সহজে চলাচল করতে পারতো। কিন্তু দখলবাজদের অবৈধ ভ্রাম্যমাণ মৌসুমী ফল, শাক-সবজি, পান-সুপারীর দোকানসহ কলা হাটার মোড় থেকে মুরগী হাটার মোড় পর্যন্ত কয়েক’শ স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানঘর স্থাপন করা হয়েছে। দৈনিক বাজারও জমে উঠেছে সেখানে। আর এসব দোকান ঘর থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন একটি চক্র। এখন সড়ককটি এমনিই সংকীর্ন অবস্থা হয়েছে যে, মাঝারী বা ছোট যান কেন একটি বাইসাইকেল নিয়ে যাওয়াই কষ্টকর।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের অনিহার ফলে একটি চক্র সরকারী এ জমি ও সড়ক দখল করে অবৈধ এ দোকান ঘর নির্মাণ ও পজিসন বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন ল-ল টাকা। দোকান প্রতি পজিশন মুল্য বাবদ ১ থেকে ৩ লাধিক টাকা নেয়া হয়েছে এবং দৈনিক বা মাসিক একটি নির্দিষ্ট ভাড়ার নামে ১’শ থেকে ৫’শ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। পৌর কর্তৃপ বলছেন নিরাপদ সড়কে চলাচল করতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা এ সমস্ত দোকানগুলো কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই রাজনৈতিক ভাবে প্রভাব খাটিয়ে আবারও সেখানে দোকান ঘর নির্মিত হয়। এতে বোঝা যায়, কর্তৃপক্ষের চেয়ে দখলকারীদের ক্ষমতায় বেশি। এ বিষয়ে সচেতন কয়েকজন পৌর নাগরিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার পর পরবর্তীতে নেপথ্যে শক্তির কারণে আবারও দোকানঘর গড়ে উঠে। যার কারণে বুঝা যায়, কর্তৃপক্ষের চেয়ে দখলবাজদের ক্ষমতাই বেশি।
মুদি দোকানদার আওয়ালগীর ফারুক বলেন, কলা হাটার ঠিক বিপরিত দিকে অর্থ্যাৎ যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে পৌর শহরের বৃহত্তম বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আজমীর বেকারী। সেখানে প্রতিবছর একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হয়। কিন্তু এর এতো কাছে এই কলা হাটের প্রধান সড়কটি যে বে-দখল হয়ে আছে-সেটা কর্তৃপক্ষের কি মোটেও চোখে পড়ে না?
জানতে চাইলে মণিরামপুর পৌর মেয়র কাজী মাহমুদুল হাসান বলেন, এখানে যারা অবৈধ দোকানঘর নির্মাণ করে তা নতুন নয়, অনেকে ২০/২৫ বছর যাবৎ দোকানদারী করছেন। ফলে হঠাৎ করে তাদেরকে উচ্ছেদ করা অসম্ভব। তবে তাদেরকে যথা সম্ভব জনসাধারণের চলাচলের বিঘ্ন না ঘটানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
সম্প্রতি বিষয়টি সদ্য যোগদানকারী উপজেলা নির্বাহি অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফীর দৃষ্টি আকর্ষণ করিলে তিনি বলেন, শুধু পৌর শহরে নয়, উপজেলার সমস্ত অবৈধ দখলবাজদের উচ্ছেদ করা হবে।
Leave a Reply