আফজাল হোসেন চাঁদ ও ফরিদা ইয়াসমিন পলি, ঝিকরগাছা থেকে ।। যশোরের ঝিকরগাছায় চেতনানাশক মেশানো কোমল পানি পান করিয়ে তিন সহপাঠী কর্তৃক দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ন্যক্কারজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দিনদুপুরে উপজেলার গঙ্গান্দপুর গ্রামে। ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটি গঙ্গান্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী। সহপাঠী লম্পট তিন ধর্ষক ঘটনার মূলহোতা গঙ্গান্দপুর হালদার পাড়ার সিরাজুল ইসলাম ওরফে ঝড়– কাসায়ের ছেলে আল আমিন হোসেন (১৮), ছুটিপুর গ্রামের হাসান আলীর ছেলে তিতুমির (১৮) ও একই গ্রামের মশিয়ার রহমানের ছেলে সোহেল (১৮), পর থেকে পলাতক রয়েছে। এঘটনায় গোটা গঙ্গান্দপুর ইউনিয়ন জুড়ে দারুন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। গঙ্গানন্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জানিয়েছেন। সরেজমিন অনুসন্ধানে গেলে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অসুস্থ ভিকটিম স্কুলছাত্রী ও তার মা আলেয়া বেগম ঘটনার স্ববিস্তর সাংবাদিকদের কাছে বর্ণনা করেছেন। ভিকটিমের বাবা গঙ্গান্দপুর গ্রামের সাজ্জাদুল হোসেন সৌদিআরব প্রবাসী। মামলা করার ব্যাপারে কোন চাপ আছে কিনা ? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলেয়া বেগম জানিয়েছেন, “কোন চাপ নেই। তবে, বোঝেন তো? আমাদের মানসিক অবস্থা এখন কেমন। স্বামীর সাথে পরামর্শ করে মামলা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে দাবি করেন আলেয়া বেগম”। ঘটনার বিবারণ থেকে জানাগেছে, সোমবার বেলা আনুমানিক ১টার দিকে ঐ স্কুলছাত্রীর বই তার শ্রেণীকক্ষ থেকে কৌশলে সরিয়ে ফেলে ঘটনার মূল নায়ক সহপাঠী আল আমীন হোসেন। অতঃপর লম্পট আল আমিন তাকে ফেনে বলে ভুল করে তোমার বইটি আমি বাড়িতে নিয়ে এসেছি। তুমি আমার বাড়িতে এসে বই নিয়ে যাও। সরল বিশ্বাসে সহপাঠী ছাত্রীটি তার বাড়িতে গেলে কোমল পানিয়ের সাথে চেতনানাশক মিশিয়ে পান করতে দেয়। এতে সে অসুস্থ্যতা বোধের একপর্যয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ফলে ঐ তিন লম্পট পালাক্রমে উপয্যুপরি ধর্ষণ করে। ঘটনাকালে আলামিনের পিতা সিরাজুল ইসলাম (ঝড়– কসাই) ও তার মা খুশিনা বেগম বাড়িতে ছিলেন না। তারা বাড়িতে ফেরারপর অজ্ঞান অবস্থায় তাদের নিজ ঘরে পড়ে থাকতে দেখে ভিকটিমকে তড়িঘড়ি করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে মেয়েটির মায়ের বাড়িতে পৌছে দেয়। এ পর্যায়ে মেয়েটির মা আলেয়া বেগমসহ অন্যরা তাকে ছুটিপুর বাজারের দন্ত চিকিৎসক ডাঃ ত্রিদিপ সরকারের কাছে নিয়ে যান। এসব ঘটনা প্রতিবেশী হাফিজুর রহমানের স্ত্রী মাহফুজা বেগম, শাহাবুল ইসলামের স্ত্রী পারভীনা বেগম ও মেয়ে মর্জিনা খাতুনসহ অনেকেই প্রত্যক্ষ করেছেন। অথচ অনেকে রহস্যজনক কারনে কেউ মূখ খুলছেন না। গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের বাড়িতে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আতাউর রহমান ঝন্টু, ইউপি সদস্য বাবলুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, বিষয়টি এখন সবার মূখে মুখে। তারা ন্যাক্কার জনক এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেছেন।
Leave a Reply